নিজস্ব প্রতিনিধি(রজত রায়): শনিবার সকালে বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের সঙ্গে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বৈঠকের পর থেকে রাজভবনের একের পর এক পদক্ষেপ রাজনৈতিক জল্পনা তৈরি করছে। সর্বশেষ পদক্ষেপ রাজ্যপালের প্রধান সচিব পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল নন্দিনী চক্রবর্তীকে। রাজভবন সূত্রে খবর, সোমবার দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক হতে পারে আনন্দের। তার আগের রাতেই নন্দিনীকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য রাজ্যপাল নবান্নকে জানিয়ে দিয়েছেন। তবে এখনও পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক ভাবে রাজভবন বা নবান্নের তরফে এই বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি।
রাজনৈতিক মহলের ধারণা, নন্দিনী চক্রবর্তীকে রাজ্যপালের প্রধান সচিব পদ থেকে সরানো নিয়ে দিল্লিতে কোনও রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত হয়ে থাকতে পারে। সেই সিদ্ধান্তের খবরই হয়তো আগ বাড়িয়ে এদিন রাতে কেউ সংবাদমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছেন। সেক্ষেত্রে এরপর নন্দিনী চক্রবর্তীকে সরানো হলে, তা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত বলেই কার্যত প্রমাণিত হবে।
বিষয়টি নিয়ে হইচই শুরু হতেই কুণাল ঘোষ টুইট করে জানান, “যে বিষয়টি নিয়ে রাতে ফোনে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইছেন, জবাব : এই বিষয়ে কোনও খবর আমাদের কাছে নেই। রাজভবন থেকেও কোনও বার্তা নেই। ফলে প্রতিক্রিয়ার প্রশ্ন নেই। হয় এটি ভিত্তিহীন রটনা। অন্যথায় দিল্লি থেকে বিজেপির কোনও রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত, যেটি আগামিকাল বোঝা যাবে। তাই এখন কিছু বলার নেই।”নন্দিনী ১৯৯৪ ব্যাচের আইএএস অফিসার। অতীতে রাজ্যের বহু গুরুত্বপূর্ণ দফতের প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করেছেন। এখন তাঁর বিরুদ্ধে তৃণমূল ঘনিষ্ঠতার অভিযোগ উঠলেও অতীতে তাঁর সঙ্গে মমতার দূরত্ব তৈরি হওয়ার কথাও শোনা যায়। যদিও ২০১১ সালে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে নন্দিনী মমতার ‘প্রিয়পাত্রী’ হয়ে ওঠেন বলে জানা যায়। তখন শিল্পোন্নয়ন নিগমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও
তথ্য-সংস্কৃতি সচিবের মতো গুরুদায়িত্ব তিনি এক সঙ্গে সামলেছেন। পরে নাকি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে মতানৈক্যের কারণে তাঁর গুরুত্ব কমতে থাকে। প্রথমে ওঁকে নিগম থেকে সরানো হয়। পরে তথ্য-সংস্কৃতিও কেড়ে নিয়ে পাঠানো হয় স্টেট গেজেটিয়ারের এডিটর পদে। সেখান থেকে সুন্দরবন উন্নয়ন। তার পর ফের প্রশাসনিক দিক থেকে প্রায় গুরুত্বহীন প্রেসিডেন্সি ডিভিশনে। সেই নন্দিনী রাজভবনে যাওয়ার পরে ফের ‘শাসক দলের লোক’ তকমা পান। রাজভবন সূত্রে খবর, সেই তকমার কারণেই তাঁকে সরতে হল।