নিজস্ব প্রতিনিধি(রজত রায়): হরিশ্চন্দ্রপুর: আবাস যোজনার তদন্ত করতে আসা কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যদের তাড়া করল ক্ষ্যাপা মোষ! বৃহস্পতিবার এমনই ঘটনা ঘটল হরিশ্চন্দ্রপুরে। গতকাল হরিশ্চন্দ্রপুর দুই নম্বর ব্লকের ভালুকা গ্রাম পঞ্চায়েতে আবাস যোজনার তদন্ত করতে আসে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের মুখে পড়ে তারা, শুনতে হয় গো ব্যাক স্লোগানও। এদিন সেই কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের ২ সদস্য পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী ভালুকা গ্রাম পঞ্চায়েতের মহলদার পাড়ায় আসেন। বাড়ি বাড়ি ঘুরে সমীক্ষা করেন। সেখানে একটি ক্ষ্যাপা মোষের আক্রমণের মুখে পড়তে হয় কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যদের। মোষের তাড়া খেয়ে দৌড়ে পাড়ার একটি বাড়িতে ঢুকে পড়েন তাঁরা। পরে পুলিশের প্রচেষ্টায় ওই ক্ষ্যাপা মোষকে সরিয়ে দেওয়া হয়। ঘটনায় কেউ আহত হয়নি। তবে পরিদর্শন নিয়ে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যরা কেউই সাংবাদ মাধ্যমের সামনে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
এদিন বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ প্রতিনিধি দলের দুই সদস্য রামসাগর ও আশিস শ্রীবাস্তব ভালুকায় এসে পৌঁছোন। সঙ্গে ছিলেন এডিএম জাহাঙ্গীর ফাতেমা জেবা। গতকালের বিক্ষোভের পর এদিন এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছিল প্রচুর পুলিশকর্মী। নেতৃত্ব ছিলেন ভালুকা ফাঁড়ির ওসি ঝোটন প্রসাদ। কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের দুই সদস্য ভালুকা গ্রাম পঞ্চায়েতের মহালদার পাড়ায় ঘুরে ঘুরে সমীক্ষা করেন। বিভিন্ন উপভোক্তা এবং ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের যাঁরা আবাস যোজনা নিয়ে অভিযোগ করেছিলেন তাঁদের প্রত্যেকের কথা শোনেন। ব্যবস্থা গ্রহণ করার আশ্বাসও দেন তাঁরা।
এদিন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল তদন্ত করতে গিয়ে দেখে, তালিকায় নাম রয়েছে ২০১৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী কৈলাস মাঝির। যিনি এলাকায় তৃণমূল নেতা হিসেবে নেতা হিসেবে পরিচিত। কিন্তু তাঁর পাকা বাড়ি রয়েছে। সংবাদ মাধ্যমের সামনে তাঁর স্ত্রী সাফাই দেন, তালিকায় নাম এসেছিল, কিন্তু আগেই বাদ হয়েছে। আবার বিজয় মহালদার নামে আরেক স্থানীয় বাসিন্দার নাম রয়েছে তালিকায়। কিন্তু তাঁরও পাকা বাড়ি রয়েছে। তিনি সাফাই দেন, পাকা বাড়ি তাঁর ছেলের।প্রসঙ্গত, গতকালই ভালুকা গ্রাম পঞ্চায়েতে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল থাকাকালীন আবাস যোজনায় দুর্নীতি এবং স্বজন-পোষণের প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়রা। স্থানীয়দের অভিযোগ ছিল, তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে আবাস যোজনায়। প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করতে গেলেও প্রশাসন কর্ণপাত করছে না।
স্থানীয় বাসিন্দা ঝুমা মণ্ডল বলেন, ‘আমি আবেদন করেছিলাম। লিস্টে আমার নাম এসেছে, কিন্তু এখনও টাকা পাইনি। কেন্দ্রীয় দলের সদস্যরা এসেছিলেন, আমাকে অনেক কথা জিজ্ঞেস করলেন। আমি বিষয়টি তুলে ধরলাম।’এপ্রসঙ্গে হরিশ্চন্দ্রপুর দুই এর বিডিও বিজয়গিরি জানান, যাঁরা ঘর পেয়েছেন এবং ঘরের জন্য আবেদন করায় তালিকায় যাঁদের নাম এসেছে, তাঁদের প্রত্যেকের বাড়ি এদিন ওঁরা পরিদর্শন করলেন। কোনওরকম বেনিয়ম ধরা পড়েনি।