নিজস্ব প্রতিনিধি(সতীশ কুমার): রবিবার দিনভর সরগরম পাকিস্তান। সকাল থেকেই জল্পনা, তোষাখানা মামলায় গ্রেপ্তার হতে পারেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। এদিন গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে লাহোরের জামান পার্কে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) সুপ্রিমোর বাড়িতে হাজিরও হয় বিশাল পুলিস বাহিনী। ‘প্রিয় নেতা’ গ্রেপ্তার হচ্ছেন, এখবর ছড়িয়ে পড়তেই লাহোরে পৌঁছে যান ইমরানের হাজার হাজার সমর্থক। তাঁদের মুখে তখন একটাই স্লোগান ‘আগে আমাদের ধরো। তারপর নেতার কাছে পৌঁছতে পারবে।’ ইমরানের বাড়ি ঘিরে রাখেন তাঁরা। এরপর শুরু হয় চূড়ান্ত নাটক। ইমরানের বাসভবনে কোনও ক্রমে প্রবেশ করে তাঁরা দেখেন, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী উধাও। তাঁর চিফ অব স্টাফ সেনেটর শিবলি ফরাজ জানিয়ে দেন, এদিন জামান পার্কের বাড়িতেই ছিলেন না পিটিআই সুপ্রিমো। দিনভর তৎপরতা দেখালেও শেষ পর্যন্ত খালি হাতেই ফিরতে হয়েছে পুলিসকে।
এই ঘটনার পরেই নিজের বাড়ি থেকে সমর্থকদের উদ্দেশে বার্তা দেন ইমরান। তিনি বলেন, কোনওদিন কারোওর সামনে মাথা নত করেননি। ভবিষ্যতে দেশ ছেড়ে পালানোরও ইচ্ছা নেই তাঁর। যদিও এই ভাষণের পরেই দেশের সমস্ত টিভি চ্যানেলে ইমরানের বক্তৃতার উপর নিষেধাজ্ঞা চাপায় পাকিস্তানের টিভি চ্যানেল নিয়ন্ত্রক সংস্থা পেমরা।বক্তৃতায় ইমরান সাফ জানিয়ে দেন, “সরকার যদি আমার বিদেশযাত্রার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে, তাতে কোনও সমস্যা নেই। কারণ আমি দেশ ছাড়ব না।” প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, পাক সরকারের একাধিক নেতা বিদেশে তাঁদের সম্পত্তি জমিয়ে রেখেছেন। কিন্তু তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না কারণ প্রাক্তন সেনাপ্রধান তাঁদের সমস্ত শাস্তির হাত থেকে বাঁচিয়ে দিয়েছেন। ইমরানের মুখে আবারও ফিরে আসে লং মার্চ চলাকালীন হামলার বিষয়। তিনি সাফ জানিয়ে দেন, শাহবাজ শরিফ-সহ একাধিক নেতা তাঁকে খুন করতে চেয়েছিল। এখনও সেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তারা, সেই জন্য নিজের সুরক্ষা আরও বাড়ানোর পক্ষে সওয়াল করেন ইমরান।তোষাখানা মামলায় ইমরানের বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ হল, তিনি প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন বিভিন্ন রাষ্ট্রনেতার থেকে পাওয়া উপহার মোটা টাকায় বিক্রি করে দিয়েছেন। অথচ ওই উপহার সরকারি তোষাখানায় জমা রাখার কথা তাঁর। এই তোষাখানা মামলায় একাধিক শুনানিতেও গরহাজির ছিলেন তিনি। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ইসলামাবাদের একটি আদালত ৭০ বছর বয়সি পিটিআই প্রধানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।