নিজস্ব প্রতিনিধি(রজত রায়): ৫ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ ও তল্লাশির পর গ্রেফতার করা হল কলকাতা হাই কোর্টের আইনজীবী তথা কংগ্রেস নেতা কৌস্তভ বাগচীকে। ধৃত কৌস্তভের দাবি, সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মন্তব্য করার কারণেই পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করল। গ্রেফতারির পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী যে আমাকে এতটা ভয় পাবেন, আমি ভাবিনি। এটা তো আমার নৈতিক জয়।’ সংবাদমাধ্যমের সামনে কৌস্তভ জানান, তাঁর সাংবাদিক বৈঠকে করা মন্তব্যের কারণে রাজ্যে শান্তি বিঘ্নিত হয়েছে বলে দাবি করেছে পুলিশ। সেই কারণ দেখিয়েই নাকি তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৫৩, ৫০৪, ৫০৫, ৫০৬, ৫০৯, ৩৫৪এ এবং ১২০বি ধারায় আইনজীবী ও কংগ্রেস নেতা কৌস্তভ বাগচীকে গ্রেফতার করা হয়।
কৌস্তভ বলেন, ‘রাত ৩ টেয় এমনভাবে পুলিশ এসে উপস্থিত হয়েছে, যেন আমি কোনও সন্ত্রাসবাদী, কোনও বিস্ফোরণ ঘটিয়েছি। তবে পুলিশও নিরুপায়। ওদের কিছু করার নেই।’ তিনি সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বলেন, ‘আজ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আমাদের রাজনৈতিক লড়াই শুরু হল। লড়াই হবে আইনি পথেও। আমার নাম কৌস্তভ বাগচী, আমিও ছেড়ে দেওয়ার পাত্র নই। রাতের ঘুম উড়িয়ে দেব।’ এদিকে কৌস্তভের গ্রেফতারির প্রতিবাদে রাজ্য জুড়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হবে বলে জানিয়েছে যুব কংগ্রেস। পুলিশি অভিযানের কথা জানতে পেরে এদিন সকালেই তাঁর বাড়িতে পৌঁছে যান যুব কংগ্রেসের কর্মীরা। ধৃত কৌস্তভকে পুলিশের গাড়িতে তোলার সময় পুলিশের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে দেখা যায় উপস্থিত কংগ্রেস কর্মীদের।
উল্লেখ্য, শনিবার ভোরে আচমকাই কলকাতা হাই কোর্টের আইনজীবী তথা কংগ্রেস নেতা কৌস্তভ বাগচীর বাড়িতে হানা দেয় কলকাতা পুলিশের একটি দল। ১২ জন পুলিশকর্মীর একটি দল এই কংগ্রেস নেতার বাড়িতে হানা দেয় বলে জানা যায়। তারা কলকাতার বটতলা থানা থেকে গিয়েছিলেন। এদিকে কৌস্তভের বাবা কুশল বাগচী সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আমার ছেলে কোনও সন্ত্রাসবাদী নয় যে তাঁর বাড়িতে রাত ৩ টের সময় পুলিশ পাঠাতে হবে। সম্পূর্ণভাবে প্রতিহিংসার রাজনীতি করা হচ্ছে। সাগরদিঘি উপনির্বাচনের পর প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীকে ব্যক্তিগত স্তরে আক্রমণ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেই মন্তব্যেরই প্রতিবাদ করেছিলেন কৌস্তভ। তারপরই এভাবে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। কোনও নোটিস, কোনও ওয়ারান্ট ছাড়া এভাবে কারও বাড়িতে পুলিশ তল্লাশি চালাতে পারে কি না আমার জানা নেই।