নিজস্ব প্রতিনিধি(অর্পিতা): গত কয়েক বছরে মোবাইল ব্যবহারের খরচ বেশ বেড়েছে; একদিকে যেমন হ্যান্ডসেটের দাম তুলনামূলকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, তেমনই এখন রিচার্জের জন্য মাসে মাসে ব্যয় করতে হচ্ছে মোটা টাকা। ১০ টাকার কার্ড কিনে ইচ্ছামত টপআপ রিচার্জ করার দিন গেছে কবেই, বরঞ্চ সিমের যাবতীয় সুবিধা পেতে বর্তমানে (এমনকি সেটি সচল রাখতেও) যে মাসপিছু ১০০ টাকার বেশি পকেট থেকে খসছে – সে বিষয়ে আর নতুন করে কিছু বলার নেই।সেক্ষেত্রে এই নতুন বছরে মোবাইল ইউজারদের (পড়ুন Jio, Airtel বা Vodafone Idea-র গ্রাহকদের) জন্য এই বিষয়ে আরও একটি ধাক্কা আসতে চলেছে বলে মনে হচ্ছে। কারণ সাম্প্রতিক গুঞ্জন বলছে, এবার দেশের বড় টেলিকম কোম্পানিগুলি আবারও তাদের প্রিপেইড রিচার্জ প্ল্যানগুলির দাম বাড়ানোর পথে হাঁটছে।
ভারতের বাজারে ফের বাড়তে চলেছে রিচার্জ খরচ
ভারত, বিশ্বের বৃহত্তম টেলিকম বাজারগুলির মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য নাম; এখানে মোবাইল ডেটা ব্যবহারের খরচ অন্যান্য অনেক দেশের তুলনায় সস্তা। তবে সর্বশেষ পাওয়া খবরের ভিত্তিতে বলা যায় যে, দীর্ঘদিন জল্পনা চলার পর এবার রিলায়েন্স জিও, ভারতী এয়ারটেল এবং ভোডাফোন আইডিয়া – তিনটি মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটরই তাদের প্রিপেইড ট্যারিফ বাড়িয়ে গড় আয় বা এআরপিউ বাড়ানোর চেষ্টা করতে চলেছে যার জেরে এই ‘সস্তা’ শব্দটি প্রাসঙ্গিক হবেনা। বিশেষজ্ঞদের অনুমান, সর্বজনীনভাবে ৫জি রোলআউট শুরু হলেই রিচার্জ প্ল্যানগুলির দাম ব্যয়বহুল হতে শুরু করবে এবং এই জিনিসটি খুব তাড়াতাড়িই ঘটবে।
শেষ হতে চলেছে সস্তায় রিচার্জের দিন, কিন্তু কেন?
৫জি লঞ্চের কয়েক মাস আগে থেকেই শোনা যাচ্ছে যে দেশের প্রাইভেট টেলিকোগুলি তাদের প্রিপেইড ট্যারিফ চার্জ আরো বাড়ানোর কথা ভাবছে; এর কারণ হিসেবে বারবার কোম্পানিগুলির ব্যবসায়িক ক্ষতির কথা বলা হচ্ছিল। সেক্ষেত্রে এই রিচার্জ খরচ বৃদ্ধি পাওয়ার পাওয়ার সম্ভাবনা প্রসঙ্গে বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, ৫জি লঞ্চের কারণে কোম্পানিগুলিকে বিপুল টাকা বিনিয়োগ করতে হয়েছে; তাই তারা যত দ্রুত সম্ভব সেই টাকা লাভ বা রিটার্ন হিসেবে ফিরিয়ে আনতে চাইবে। এই কারণে গ্রাহক পিছু লাভের পরিমাণ বাড়ানোর (মানে রিচার্জ প্ল্যানের দাম বাড়া) ঘটনা অবশ্যম্ভাবী!
প্রায় একবছর আগেই বাড়ানো হয়েছিল ট্যারিফ শুল্ক
আপনাদের মনে করিয়ে দিই, গত ২০২১ সালের ডিসেম্বরে শেষ রিচার্জের দাম বাড়িয়েছিল কোম্পানিগুলি। তারপর থেকে এখনো পর্যন্ত রিচার্জ করতে হলে মোবাইল গ্রাহকদের মোটা টাকা গুনতে হচ্ছে। সেক্ষেত্রে চলতি বছর অর্থাত্ নতুন ২০২৩ সালের প্রথম ত্রৈমাসিকেই ফের এই খরচের পরিমাণ বাড়তে পারে; কারণ রিচার্জ খরচ না বাড়লে কোম্পানিগুলির মুনাফা হবেনা, যেমনটা শুরুতে বলেছি। এই প্রসঙ্গে বলি, বিগত কয়েক মাসে গ্রাহকসংখ্যা বাড়লেও সেই তুলনায় সামগ্রিক আয় বাড়েনি জিওর। অন্যান্য কোম্পানিগুলিরও অবস্থা কার্যত একইরকম। এর মধ্যে ভোডাফোন আইডিয়া বা ভিআই (Vi) বাজারে টিকে থাকার জন্য রিচার্জের দাম বাড়ানো বাধ্যতামূলক একটি বিষয়। এখন, কোম্পানিগুলি একে অপরের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত কার্যকরী হওয়ার সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করছে, মানে কোনো একটি সংস্থা ট্যারিফ শুল্ক বাড়ানোর কথা ঘোষণা করলেই বাকিরাও সেই একই কাজ করতে দেরি করবেনা!