নিজস্ব প্রতিনিধি(রজত রায়): এবার দিদিকে চায়’ স্লোগান দিয়েছে। এসবের মধ্যেই সংবাদসংস্থা পিটিআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন নিজের মতপ্রকাশ করে জানালেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার যোগ্যতা রয়েছে। আর এই মন্তব্য নিয়ে এখন আলোড়ন পড়ে গিয়েছে।
এমনিতে অমর্ত্য সেন বিজেপি এবং নরেন্দ্র মোদির ঘোষিত বিরোধী। তবে এভাবে খোলাখুলি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হয়ে খোলাখুলি বার্তা দিতে কখনও শোনা যায়নি তাঁকে। বরাবরই তিনি বামমনস্ক। কিন্তু ২০২৪ সালের লোকসভার আগে অমর্ত্য একপ্রকার স্পষ্টই বলে দিলেন, প্রধানমন্ত্রী পদে মমতার যোগ্যতা নিয়ে কোনও প্রশ্ন নেই। তিনি সংবাদসংস্থা পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “মমতার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার যোগ্যতা নেই, এমনটা একেবারেই নয়। আমার মনে হয় মমতা ভীষণভাবেই যোগ্য।” যদিও পরক্ষণেই নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ বলে দেন,”একই সঙ্গে এটা এখনও প্রতিষ্ঠিত হয়নি যে, বিজেপির বিরুদ্ধে যে জনরোষ তৈরি হয়েছে, মমতা সেটাকে কাজে লাগিয়ে সবাইকে একত্রিত করে দেশে বিভেদকামী শক্তিকে রুখে দিতে পারেন।”
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ সোজা বলে দিচ্ছেন, বিজেপি ২০২৪ লোকসভা ভোট জিতে গিয়েছে ধরে নেওয়াটা মস্ত বড় ভুল হবে। তাঁর মতে, “একাধিকআঞ্চলিক দল ভীষণভাবে গুরুত্বপূর্ণ। ডিএমকে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ, তৃণমূল ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। সমাজবাদী পার্টিরও শক্তি আছে। তবে ওরা কতদুর যাবে সেটা জানি না।” অমর্ত্যর অভিযোগ,”বিজেপি (BJP) ভারতের দৃষ্টিভঙ্গিকে সীমাবদ্ধ করে দিয়েছে। ভারত সম্পর্কে ধারণাটাকে এরা এত সংকীর্ণ করে দিয়েছে যে এখন ভারতকে শুধু হিন্দু ভারত বা হিন্দি বলয়ের ভারত হিসাবে দেখা হচ্ছে। যদি বিজেপির কোনও বিকল্প না পাওয়া যায় তাহলে দেশের বাকি অংশের প্রতি সেটা অন্যায় করা হবে।”
রাজনৈতিক দলগুলিকে অমর্ত্য সেন মনে করিয়ে দিচ্ছেন, বিজেপি প্রবল প্রতাপশালী হলেও, তাঁদের দুর্বলতাও আছে। তিনি বলেছেন, অন্য দলগুলিও চেষ্টা করলে সুযোগ তৈরি করতে পারে। আলোচনায় চলে আসতে পারে। বিজেপি বিরোধী দলগুলি একত্রিত হতে পারবে না, এমন কোনও তথ্য আমার জানা নেই। তবে একই সঙ্গে তিনি মেনে নিয়েছেন, একা কংগ্রেসে পক্ষে আর বিজেপিকে হারানো সম্ভব নয়। কারণ কংগ্রেস অনেক দুর্বল হয়ে গিয়েছে।নবতিপর অর্থনীতিবিদ ‘ঘোষিত’ বিজেপি বিরোধী। ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসার পর একাধিক বার উগ্র জাতীয়তাবাদের বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করেছেন তিনি। বিজেপির লাগাতার আক্রমণের মুখেও পড়তে হয়েছে অর্থনীতিতে নোবেলজয়ীকে। এই বাংলা থেকেও রাজ্য বিজেপির সভাপতি থাকাকালীন তাঁকে নজিরবিহীন ভাষায় আক্রমণ করেছিলেন দিলীপ ঘোষ।
সম্প্রতি তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেছিলেন, আগামী বছর ১৫ অগস্ট লালকেল্লা থেকে দেখতে পাওয়া যাবে ৫ ফুটের মহিলা হাওয়াই চটি আর তাঁতের শাড়ি পরে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিচ্ছেন। এটা অবশ্য তাঁর দলের সদস্যের কথা। ২০২২ সালে একুশে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘কোন অঙ্কে, কীভাবে আমি বলব না। তবে ২০২৪–এ দিল্লিতে বিজেপি থাকবে না, থাকবে না, থাকবে না।’ এবার স্বয়ং নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন এমন মন্তব্য করলে বিজেপির অস্বস্তি বাড়তে শুরু করেছে বলে খবর।