নিজস্ব প্রতিনিধি(অর্পিতা): বাঙালি কিন্তু পোস্তপ্রিয়। গরম ভাতের সঙ্গে পোস্তবাটা কিংবা আলুপোস্ত হলেই দুপুরের খাবার তৃপ্তি করে খাওয়া হয়ে যায়। কিন্তু অনেকদিন ধরেই বাজারে পোস্তর (Poppy Seeds) দাম চড়া। তাই বাঙালির পাতে পোস্তর টান। ছিঁটেফোঁটা পোস্ত দিয়েই এখন স্বাদপূরণ করতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে এ রাজ্যে পোস্ত চাষের পক্ষে সওয়াল করলেন মুখ্যমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার বিধানসভায় দাঁড়িয়ে তিনি কেন্দ্রের কাছে পোস্ত চাষের অনুমোদন চান বলে জানালেন।
এই রাজ্যে পোস্ত চাষের অনুমতি নেই। বাজারে যে সব পোস্ত পাওয়া যায়, তার অধিকাংশটাই আসে অন্য দেশ বা অন্য রাজ্য থেকে। সেই কারণে পোস্তর দাম সব সময়ই চড়া থাকে। মমতা মনে করেন, এ রাজ্যেই পোস্ত চাষ হলে, সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যেই তা মিলবে। পোস্ত বাঙালির কাছে সব সময়ই প্রিয় খাবার। বাঙালি সব সময়ই পোস্তের বড়া, আলু পোস্তের মতো পদগুলি ভোজের পাতে পেতে চায়। কিন্তু সাধ থাকলেও সাধ্য থাকে না অনেকের। সেই প্রসঙ্গ টেনেই রাজ্যে পোস্ত চাষের অনুমতি দেওয়ার প্রসঙ্গ তোলেন মমতা।
বিধানসভায় খাদ্য বাজেট নিয়ে আলোচনার সময় বিজেপি বিধায়কদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আলু পোস্ত, পোস্তর বড়া খান না?’’ এর পরই বলেন, ‘‘তা হলে ৪টি রাজ্যে কেন চাষ হবে? আমাদের কেন চাষ করতে দেওয়া হবে না? বিরোধী বন্ধুরাও বলুন। সব পোস্তয় নেশার জিনিস তৈরি হয় না।’’ এই প্রসঙ্গে রান্নার গ্যাসের দাম ১১০০ টাকা, সে কথাও উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর আরও কথায়, ‘‘পোস্তর বড়া খেতে অতিরিক্ত খরচ করতে হবে? আমি অনুমতি চেয়ে চিঠি লিখেছি।’’
অতীতেও পোস্ত চাষের অনুমতি নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে কথা হয়েছিল রাজ্যের। ২০২০ সালে ভুবনেশ্বরে পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলির (ইস্টার্ন জ়োনাল কাউন্সিল) বৈঠকের সময় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে এই বিষয়টি উত্থাপন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাই কেন্দ্র অনুমতি দিলে প্রশাসনিক সুরক্ষাকবচে রাজ্যে পোস্ত চাষের উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে বলে শাহকে বলেছিলেন মমতা। তবে তার পরও এই নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি কেন্দ্রীয় সরকার।
পোস্ত চাষের প্রসঙ্গে পেঁয়াজ চাষের কথাও উল্লেখ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেছেন, একটা সময় পেঁয়াজের জন্য মহারাষ্ট্রের নাসিকের উপর নির্ভর করতে হত বাংলাকে। পরে গবেষণা করে পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, বীরভূমে পেঁয়াজ চাষ করা হচ্ছে এবং এই প্রয়াস সফলও হয়েছেন। পোস্ত, পেঁয়াজ চাষের পাশাপাশি ইলিশ মাছের প্রসঙ্গও টেনেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেছেন, ‘‘ডায়মন্ডহারবারে ইলিশ গবেষণা কেন্দ্র তৈরি করেছি। তাই বাংলাদেশের উপর নির্ভর করতে হবে না।’’