নিজেস্ব প্রতিনিধি সম্পা ঘোষ :মাইন্ড সেট,একাকী নয় ও ভাষা সংসদ -এর একটি অনন্য প্রয়াস।
“হিংসা ও মনন :একাকী নয় “এই ট্যাগ লাইন নিয়ে তাদের আজকের আলোচনার বিষয় ছিল কলকাতা প্রেস ক্লাবে। একটু ভালোবাসার স্পর্শ, আইনের সঠিক সহায়তা এবং মানসিক ও মানবিক স্পর্শ এই তিনটি খুব জরুরি।এই তিনটি শব্দের সমন্বয়ে মানুষের পাশে থাকার চেষ্টায় আজকের এই আলোচনা খুবই উল্লেখযোগ্য ও প্রাসঙ্গিক।
রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন ‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে, তবে একলা চলো রে’। সত্যিই কি একা চলা যায় জীবনের চলার পথে? যায় না বোধয়। কখনও না কখনও কারও একা হয়ে যাওয়া বড় বেদনা দেয়। এই প্রসঙ্গে কবি বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের কথা মনে পড়ছে ‘মানুষ বড় কাঁদছে, তুমি মানুষের পাশে দাঁড়াও’। সেই আদিকাল থেকেই হিংসার উৎপত্তি। কখনও কখনও তা দাবানলের মতো ছড়িয়েছে। ছারখার হয়েছে মানুষের মন ও মনন। আবার অবদমিতও হয়েছে সে আগুন। আর সে তো সম্ভবও। কারণ মনের একই স্তর থেকেই তো হিংসা ও ভালোবাসার জন্ম। আমরা তাই তার শুশ্রূষাও করতে পারি। একা মানুষটা তার মনের পড়শী হয়ে স্বস্তির আশ্বাস দিতে পারা, হিংসার প্রবৃত্তি থেকে বড় একান্ত ভালোবাসায় উত্তরণের আলো দেখানো- এই সমস্ত ব্যাপারটায় এগিয়ে আসতে পারে মনোচিকিৎসক, মনোবিদরা, প্রয়োজনে আইনি সহায়তা থাকবে। আর সাহিত্য তো চিরকাল একা মানুষের দোসর হয়ে বহুর মধ্যে তার মনকে মেলতে দিয়েছে। তাই সেদিন এই ভাবনা নিয়েই আলোচনা ছিল ‘হি়ংসা ও মনন:একাকী নয়’। সেখানে উপস্থিত ছিলেন মনোচিকিৎসক ড.দেবাঞ্জন পান, ড. অমরনাথ মল্লিক, প্রাক্তন বিচারপতি শ্রী অশোক গঙ্গোপাধ্যায়, আইনজীবী রম্যাণী ঘোষাল ও সাহিত্যিক বিতস্তা ঘোষাল।
মনোচিকিৎসক ড.দেবাঞ্জন পান -এর বক্তব্য যারা ডোমেস্টিক ভায়োলেন্সর শিকার বা অন্য কোনো রকম ভাবে হিংসার শিকার তাঁরা মনের কথা বলে উঠতো পারে না, অনেকে বলার ভাষা বুঝে উঠতে পারে না বা অনেকে বলার পরিবেশ খুঁজে পাননা তাদের একটা বলার জায়গা দরকার,সেই জায়গা টা মানসিক ভাবে “মাইন্ড সেট” তাদের সেই জায়গা টা দেবে।
রম্যাণী ঘোষাল বলেছেন,একটা বাচ্চা থেকে শেষ বয়স অব্দি আমরা একা।একটু ভালোবাসার স্পর্শ, আইনের স্পর্শ,এবং সবচেয়ে বেশি জরুরি মানুষিক স্পর্শ এই তিনটি একসাথে করে আমরা মানুষের পাশে থাকতে চাই, থাকার চেষ্টা করি এটা আমার স্বপ্ন, “একাকী নয় “এটা আমার স্বপ্ন।
মাইন্ড সেট,একাকী নয় ও ভাষা সংসদের বিষয়ে সাহিত্যিক বিতস্তা ঘোষালের বক্তব্য, ক্রমশ আমরা এই হিংসায় উন্মত্ত পৃথিবীতে একা হয়ে যাচ্ছি, সুযোগ পেলেই আমরা আরেক জন কে আক্রমণ করছি, কেউ কারোর ভালো দেখতে পাচ্ছি না, কিভাবে মানুষ কে আরো পেছনে ফেলে রাখা যায়,সেই জায়গায় আমরা চেষ্টা করছি মানুষের কাছে গিয়ে তাদের প্রয়োজন বোঝার চেষ্টা করবো সবাই যেন একসাথে থাকতে পারি,কারণ যত আমরা একসাথে থাকবো ততোই একটা সুন্দর সমাজ তৈরি হবে, নইলে আমাদের আগামী দিন খুব দুঃসহ হয়ে উঠবে।বিতস্তা ঘোষাল আরো বলেন যে মানুষের কাছে গিয়ে তাদের সমস্যার কথা গুলো শুনবার চেষ্টা করবো,তাদের সমস্ত কথা বলার জায়গা গুলো কিসের জন্য তাঁরা পিছিয়ে যাচ্ছে, কোথা থেকে হিংসার উৎপত্তি হচ্ছে,এই গুলো আমরা ধরে রাখার চেষ্টা করবো।
যত দিন যাচ্ছে মানুষ্ একা হয়ে যাচ্ছে আমরা মানুষের বাইরে টা দেখি, অনেকের ভেতরের কান্না টা দেখি না মনের কথা বলতে না পারার কান্না,দীর্ঘ মানসিক যন্ত্রনা,মানসিক নিঃসঙ্গতার কান্না, হিংসার শিকার হওয়া, নিজের নেয্য প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত এটা ও যে মানুষের জীবনের খুব বড়ো সমস্যা সেটাই আমরা ভুলে যাই ,এসব সমাজের যে বড় ক্ষতিসাধন কর এই চিন্তা ধারা থেকে মাইন্ড সেট,একাকী নয় ও ভাষা সংসদ -এর একটি অনন্য প্রয়াসের মধ্য দিয়ে মানুষের পাশে থাকার প্রচেষ্টা করছেন ভবিষ্যতে ও বিভিন্নভাবে এরা মানুষের পাশে সর্বদা থাকার অঙ্গীকার দিয়েছেন।