নিজস্ব প্রতিনিধি(সতীশ কুমার):টুইটার হ্যান্ডেলে নিজের পরিচয় বদলে ফেললেন রাহুল গান্ধী। শনিবারই সাংসদ পদ বাতিল করা নিয়ে নিজের আক্রমণাত্মক অবস্থান বুঝিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। এ বার সেই অপসারণকে রাজনৈতিক হাতিয়ার করলেন টুইটার হ্যান্ডলে নিজের পরিচয়েও। রবিবার সকাল থেকে রাহুলের টুইটারে তাঁর ছবির নীচে লেখা রয়েছে, ‘এটি রাহুল গান্ধীর অফিশিয়াল অ্যাকাউন্ট। তিনি জাতীয় কংগ্রেসের সদস্য।’ এর পরেই নতুন শব্দবন্ধ জুড়েছে অ্যাকাউন্টে। লেখা হয়েছে, ‘ডিস্’কোয়ালিফায়েড এমপি’ (অপসারিত সাংসদ)। আভিধানিক বানান ডিস্কোয়ালিফায়েড-এর বদলে ডিস্’কোয়ালিফায়েড লিখে কি বিশেষ কিছু বলতে চাইলেন অপসারিত সাংসদ? তার কোনও ব্যাখ্যা অবশ্য দেওয়া হয়নি। এমনকি, গুগল সার্চেও রাহুলের এই নির্দিষ্ট খবরটির আগে কোথাও ইংরাজিতে ডিস্’কোয়ালিফায়েড বানানের অস্তিত্ব নেই।
গত শুক্রবার সংসদপদ বাতিল হয়েছে রাহুল গান্ধীর। এরপর গতকাল তিনি সংবাদ সম্মেলন করে বিজেপি এবং নরেন্দ্র মোদীকে ফের আক্রমণ শানান। তিনি বলেন, ‘আমাকে চুপ করিয়ে রাখা যাবে না’। তাঁর দাবি, আদানি নিয়ে সংসদে তাঁর ভাষণের ‘ভয়ে’ তাঁর সাংসদপদ বাতিল করা হয়েছে। এই আবহে সাংসদপদ বাতিলের বিষয়টিকে যেন ‘সম্মান’ হিসেবে গ্রহণ করেছেন রাহুল গান্ধী। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে তাঁর প্রতি হওয়া ‘অবিচার’ মানুষের সামনে তুলে ধরতেই রাহুল এই ‘শাস্তি’কেই নিজের হাতিয়ার করে তুলেছেন।
রাহুল গান্ধীর সংসদ পদ খারিজ হওয়াকে কেন্দ্র করে জাতীয় রাজনীতিতে আলোড়ন তৈরি হয়েছে। কংগ্রেসের দাবি, এর নেপথ্যে ‘রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র’ রয়েছে। লোকসভায় রাহুলের মুখ বন্ধ করতেই তাঁকে সাংসদ পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি। শনিবারের সাংবাদিক সম্মেলনে একই কথা বলেন রাহুল নিজেও।
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাহুল গান্ধী বলেন, ‘আদানিজির পরিকাঠামোর ব্যবসা আছে, কিন্তু ব্যবসায়
খাটানো টাকা তাঁর নয়। আমি শুধু জানতে চেয়েছিলাম এই ২০ হাজার কোটি টাকা কার? মিডিয়ার রিপোর্ট থেকে তথ্য নিয়েছি। নরেন্দ্র মোদী ও আদানির সম্পর্ক নতুন নয়। নরেন্দ্র মোদী যখন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন তখন থেকেই এই সম্পর্কের শুরু। বিমানে বসে থাকা নরেন্দ্র মোদীর ছবি দেখালাম। আমার বক্তৃতা মুছে ফেলা হল। আমি স্পিকারের কাছে বিস্তারিত চিঠি লিখেছি এরপর।’
প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি এরপর বলেন, ‘সংসদে বক্তব্য রাখা আমার অধিকার। কিন্তু আমাকে বলতে দেওয়া হচ্ছিল না। আমি স্পিকার স্যারের চেম্বারে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, কেন তিনি আমাকে কথা বলতে দিচ্ছেন না। তিনি হেসে বললেন যে তিনি আমাকে বলেতে দিতে পারবেন না। তিনি আমাকে তাঁর সাথে এক কাপ চা খেতে বললেন এরপর।’ রাহুল বলেন, ‘আমি এখানে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা করতে এসেছি। আমি তাঁদের ভয় পাই না। এটা আমার ইতিহাসে নেই। আদানি এবং নরেন্দ্র মোদীর মধ্যে সম্পর্ক কী, তা আমি জিজ্ঞাসা করতে থাকব।’