নিজস্ব প্রতিনিধি(অর্পিতা): তাঁর চাকরিজীবন কম বর্ণময় নয়। কেন্দ্রীয় সরকারে সচিব স্তরে চাকরি, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। কেন্দ্রীয় সরকারের পাশাপাশি রাজ্য সরকারের নানা গুরুত্বপূর্ণ পদ সামলানো। বর্তমানে তিনি পশ্চিমবঙ্গের ২২তম রাজ্যপাল। গুরুদায়িত্বের অজস্র চাকরির নানা স্মৃতি হামেশাই মনে ঘোরাফেরা। সেই স্মৃতির টানে মাঝেমধ্যেই ধরা দেওয়ার চেষ্টা। এই চেষ্টারই অঙ্গ হিসেবে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস ফেব্রুয়ারি মাসের গোড়ায় জলপাইগুড়িতে আসছেন। এই শহরেই যে তিনি স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ার (এসবিআই) প্রধান শাখার গুরুদায়িত্ব সামলেছিলেন। খুবই সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য সফর হলেও রাজ্যপাল তারই মধ্যে নিজের পুরোনো স্মৃতিকে আঁকড়ে ধরার চেষ্টা করবেন।
১৯৭৭ সালের আইএএস সিভি আনন্দ বোসের ঈর্ষণীয় পড়াশোনা বা চাকরিজীবন এখন অনেকেরই জানা। চাইলে গুগল করে যে কেউ যে কোনও সময়ই তা জেনে নিতে পারেন। তবে গুগল করে কিন্তু রাজ্যপালের সঙ্গে জলপাইগুড়ির সম্পর্ক সহজে জানা যাবে না। অনেকেই জানেন না, রাজ্যের বর্তমান রাজ্যপাল আইএএস হওয়ার পর সেই বছরই প্রবেশনারি চিফ ম্যানেজার হিসেবে এসবিআইয়ের কলকাতা শাখার পাশাপাশি ব্যাংকের জলপাইগুড়ি শহরের ক্লাব রোডের প্রধান শাখার দায়িত্বও সামলেছিলেন। জলপাইগুড়ি শহরে তাঁর বেশ কয়েক মাস চাকরির স্মৃতি রয়েছে। তিনি এখানে ব্যাংক সংলগ্ন বাংলোয় থাকতেন। প্রথমে ঠিক ছিল রাজ্যপাল ২ ফেব্রুয়ারি জলপাইগুড়িতে আসবেন। জেলা শাসক মৌমিতা গোদারা বসু এমনটাই জানিয়েছিলেন। পরে ঠিক হয়, ২ তারিখ নয়, তার পরের দিন, অর্থাৎ ৩ ফেব্রুয়ারি তিনি জলপাইগুড়িতে তাঁর পুরোনো কর্মস্থল ঘুরে দেখবেন। তবে তাঁর এই কর্মসূচি এখনও চূড়ান্ত নয়। চূড়ান্ত হলে প্রশাসন তা আলাদাভাবে জানিয়ে দেবে।
১৯৭৭ সাল থেকে ২০২৩, প্রায় ৪৬ বছরে জলপাইগুড়ি শহর অনেকটাই বদলে গিয়েছে। রাজ্যপাল ব্যাংকের যে শাখায় কাজ করতেন সেটি ইংরেজ আমলে তৈরি লাল ভবন নামে পরিচিত ছিল। সেই ভবনটি এখনও
থাকলেও তা অন্য কাজে ব্যবহৃত হয়। ব্যাংকের প্রধান শাখার কাজ নতুন ভবনে স্থানান্তরিত হয়েছে। প্রায় ৪৬ বছর আগে বর্তমান রাজ্যপালের সঙ্গে কাদের কাজের সৌভাগ্য হয়েছিল? সেই তথ্য মিললেও ব্যাংকে সিভি আনন্দ বোসের সেই সময়ের সতীর্থদের কাউকেই হাতের কাছে পাওয়া যাচ্ছে না। এসবিআই কর্তৃপক্ষ অবশ্য হাল ছাড়ছে না। ৩ তারিখে রাজ্যপালের সামনে সেই সতীর্থদের কাউকে যদি হাজির করে দেওয়া যায়, কর্তৃপক্ষ স্বপ্নে মশগুল। এসবিআইয়ের জলপাইগুড়ির প্রধান শাখার চিফ ম্যানেজার দীপককুমার সিং বললেন, রাজ্যের বর্তমান রাজ্যপাল ১৯৭৭ সালে খুব অল্প সময়ের জন্য প্রবেশনারি চিফ ম্যানেজার হিসেবে ব্যাংকের এই শাখার দায়িত্ব সামলেছিলেন। তিনি ২ ফেব্রুয়ারি জলপাইগুড়িতে আসবেন বলে প্রথমে ঠিক ছিল। তবে ঠিক হয়েছে, ৩ ফেব্রুয়ারি তিনি জলপাইগুড়িতে আসতে পারেন।
৩ ফেব্রুয়ারি জলপাইগুড়িতে এলেও রাজ্যপাল ১০-১৫ মিনিটের বেশি তাঁর পুরোনো কর্মস্থলে থাকবেন না। তিনি যে সময় ব্যাংক পরিদর্শন করবেন সেই সময় যাতে গ্রাহক পরিষেবা বিঘ্নিত না হয় সেদিকে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কড়া নজর রাখবে। ব্যাংক চত্বরের সামনে ফাঁকা জায়গায় একটি ছোট মঞ্চ করা হচ্ছে। রাজ্যপাল সেখানে বক্তব্য রাখতে পারেন।