Thursday, June 19, 2025
Homeখবরদক্ষিণ খড়দহের কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দুষ্কৃতীদের কবলে, আইনি নির্দেশ অমান্য করে তালাবন্ধ...

দক্ষিণ খড়দহের কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দুষ্কৃতীদের কবলে, আইনি নির্দেশ অমান্য করে তালাবন্ধ – প্রশাসনিক হস্তক্ষেপের দাবি

নিজস্ব প্রতিনিধি সম্পা ঘোষ খড়দহ– শিক্ষার শহর খড়দহে এক গুরুতর ঘটনার মুখোমুখি হয়েছে প্রায় ১৮ বছরের পুরনো একটি প্রতিষ্ঠিত কারিগরি কম্পিউটার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। দক্ষিণ খড়দহের ১২ নম্বর ওয়ার্ডে, খড়দহ স্টেশন সংলগ্ন নন্দনকানন এলাকায় অবস্থিত এই প্রতিষ্ঠানটি, যা ২০০৯ সালে সাংসদ সৌগত রায় এবং রামকৃষ্ণ মিশনের দিব্যানন্দ মহারাজের উদ্যোগে শুভ উদ্বোধন হয়, বর্তমানে স্থানীয় দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্যে সংকটের মুখে।

সম্পূর্ণ মহিলা শিক্ষিকা দ্বারা পরিচালিত এই প্রতিষ্ঠান বহু ছাত্রছাত্রীর ভবিষ্যৎ গঠনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। প্রতিষ্ঠানটি বর্তমানে “জিভাম এডুকেশন ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট” ও “দক্ষিণ খড়দহ যুব কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র”-এর অধীনে পরিচালিত হচ্ছে, যারা ২০২৩ সালে ১৭ লক্ষ টাকার অগ্রিম চুক্তির ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠানটি ক্রয় করার উদ্যোগ নেয়। তবে মালিকপক্ষের সঙ্গে অন্যান্য ব্যক্তির আর্থিক বিবাদের কারণে বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়।

আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য

বিচারপ্রক্রিয়া চলাকালীন, আদালত (ROOL 39 অনুযায়ী) একটি নির্দিষ্ট আদেশ জারি করে, যেখানে বলা হয় এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক, শিক্ষিকা, ছাত্র-ছাত্রী এবং অভিভাবক ছাড়া অন্য কেউ প্রবেশ করতে পারবে না। সেইসঙ্গে, প্রতিষ্ঠানটির সাইনবোর্ড, শিক্ষাসামগ্রী এবং প্রবেশপথকে সুরক্ষিত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয় এবং আদালতের অনুমতি ছাড়া বিক্রয় নিষিদ্ধ করা হয়।

কিন্তু আদালতের এই নির্দেশ অমান্য করে স্থানীয় এক প্রভাবশালী দুষ্কৃতী, প্রসেনজিৎ গুপ্তা চৌধুরী ওরফে ‘ছুক্কু’, কিছু রাজনৈতিক নেতার মদতে প্রতিষ্ঠানটির মেইন গেটে শিকল লাগিয়ে তালা ঝুলিয়ে দেয়। গেটের সামনে একটি চারচাকা গাড়ি রেখে পথ আটকে দেওয়া হয়, যার ফলে প্রতিষ্ঠান কার্যত অচল হয়ে পড়ে।

পুলিশ ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি

প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে স্থানীয় থানা, ওয়ার্ড কাউন্সিলর, খড়দহের বিধায়ক ও বিভিন্ন প্রশাসনিক মহলে অভিযোগ জানানো হলেও এখনো পর্যন্ত কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। আদালতের গ্রীষ্মকালীন ছুটির কারণে তাৎক্ষণিক আইনি প্রতিকারও সম্ভব হয়নি।

প্রতিষ্ঠানের শিক্ষিকাদের বক্তব্য, “আমরা শুধুমাত্র আইন, আদালত ও পুলিশের উপরই নির্ভর করি। আমাদের শিক্ষার পরিবেশ এবং ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ বাঁচাতে দ্রুত প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ জরুরি।”

আগামী দিনের আশার আলো

স্থানীয় মানুষ ও অভিভাবকমহলের দাবি, খড়দহের এই সরকারি স্বীকৃত কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র যাতে আবার পূর্ণ দমে চালু হতে পারে এবং ছাত্রছাত্রীরা যাতে নির্বিঘ্নে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে, তার জন্য পুলিশ প্রশাসন এবং আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হোক।

সবশেষে, প্রশ্ন উঠেছে—আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও এমন দুষ্কৃতিমূলক কার্যকলাপ চালিয়ে যাওয়ার সাহস কারা দিচ্ছে? এবং প্রশাসন কবে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে?

এই ঘটনায় প্রশাসনের সক্রিয় ভূমিকা এবং আইনপ্রয়োগের দৃষ্টান্ত স্থাপনই এখন এলাকার মানুষের একমাত্র প্রত্যাশা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments