Friday, May 16, 2025
Homeরাজনীতিরা‍ষ্ট্রীয় সয়ং সেবক (RSS)দিলীপ ঘোষকে নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত নিতেই সকলের প্রশ্ন, কোন...

রা‍ষ্ট্রীয় সয়ং সেবক (RSS)দিলীপ ঘোষকে নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত নিতেই সকলের প্রশ্ন, কোন পথে প্রাক্তন সভাপতির রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ?

নিজস্ব প্রতিনিধি(রজত রায়) দীঘায় জগন্নাথ মন্দির দর্শন এবং সেখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ছবি তোলা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে বর্তমানে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এই ঘটনা গেরুয়া শিবিরের অন্দরেও বড়সড় বিতর্ক তৈরি করেছে এবং দিলীপ ঘোষ বিজেপি ও রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘ (RSS)-এর ‘কাঁটা’ হয়ে উঠেছেন বলে জল্পনা চলছে।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় দলের অন্দরে এবং কেন্দ্রীয় স্তরে আলোচনা শুরু হয়েছে।
রাজ্য বিজেপির অন্যতম পরিচিত মুখ এবং প্রাক্তন সফল সভাপতি হিসেবে পরিচিত দিলীপ ঘোষ তাঁর ঠোঁটকাটা মন্তব্যের জন্য বরাবরই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকেন। তবে দিঘার অনুষ্ঠানে তাঁর উপস্থিতি এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে হেসে কথা বলার ছবি প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই তাঁর দলবদল নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে জল্পনা তীব্র আকার ধারণ করে। পাশাপাশি দলের একাংশ তাঁর তীব্র সমালোচনা শুরু করে, যা নিয়ে দিলীপও পাল্টা আক্রমণ করেন। নাম না করে তিনি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সহ একাধিক নেতাকে কটাক্ষ করেছেন বলেও শোনা যাচ্ছে। এই প্রকাশ্য তরজা পদ্ম শিবিরের অন্দরে কাদা ছোঁড়াছুঁড়ির পর্যায় পৌঁছে দলের ক্ষতি করছে বলে মনে করছে বিজেপির একাংশ।
সূত্রের খবর, দিলীপ ঘোষের সাম্প্রতিক কার্যকলাপ এবং দিঘার ঘটনা নিয়ে RSS মোটেও ভালোভাবে দেখছে না। ইতিমধ্যেই দিলীপ ঘোষকে নিয়ে সংঘের অন্দরে একপ্রস্থ আলোচনা হয়ে গেছে। শুধু তাই নয়, দিলীপ ঘোষ ইস্যুতে RSS-এর শীর্ষ নেতৃত্ব এবং বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার মধ্যেও আলোচনা হয়েছে বলে খবর। সেখানেই দিলীপ ঘোষকে নিয়ে একটি বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
সূত্রের খবর অনুযায়ী, সংঘের নির্দেশেই আপাতত দিলীপ ঘোষকে বিজেপির কোনও গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে ডাকা হবে না। গত ৬ এপ্রিল বিজেপির যে রাজ্য স্তরের বৈঠক হয়েছিল, সেখানেও দিলীপকে ডাকা হয়নি বলেও সিদ্ধান্ত হয়েছিল বলে জানা গেছে। বিজেপি সূত্রের খবর, আপাতত দিলীপ ঘোষকে দলের কোনও কর্মসূচিতেও না ডাকার অলিখিত সিদ্ধান্ত হয়েছে। এমনকি দিলীপ ঘোষ নিজে যদি কোনও কর্মসূচি গ্রহণ করেন, সেখানে বিজেপি নেতাদের যোগ না দিতেও বলা হয়েছে বলে জল্পনা চলছে। যদিও এই বিষয়ে কোনও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দলের তরফে করা হয়নি। এই পরিস্থিতিকে অনেকেই দিলীপ ঘোষকে কার্যত ‘বয়কট’ করা হচ্ছে বলে মনে করছেন।
সামনেই বিধানসভা নির্বাচন। দিলীপ ঘোষ রাজ্যে জনপ্রিয় একজন নেতা এবং তাঁর একটি নির্দিষ্ট অনুগামী রয়েছে। এই কারণেই দিলীপ ঘোষকে নিয়ে দ্রুত কোনও কঠোর সিদ্ধান্ত না নিয়ে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব ‘জল মাপছে’ বলে ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে।
রাজ্য বিজেপির সক্রিয় নেতা হিসেবে দিলীপ ঘোষ বরাবরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর সরকারের তীব্র সমালোচনায় সরব ছিলেন। দুর্নীতি সহ রাজ্যের একাধিক ইস্যু নিয়ে তিনি যথেষ্ট আক্রমণাত্মক ছিলেন। কিন্তু দিঘায় মমতার সান্নিধ্য এবং সেই ছবি তাঁর সেই ‘ছবি’ অনেকটাই বদলে দিয়েছে বলেও মনে করছেন অনেকে। প্রশ্ন উঠছে, কেন দিলীপের এই বদল? যদিও দিলীপ নিজে জানিয়েছেন তিনি বিজেপিতে আছেন এবং থাকবেন, কিন্তু তাঁর সাম্প্রতিক কার্যকলাপ ভিন্ন ইঙ্গিত দিচ্ছে বলেও অনেকের ধারণা। দিলীপও হয়তো বিজেপির অবস্থান নিয়ে ‘জল মাপছেন’ এবং সেই কারণেই কি তাঁর এই দিঘা যাত্রা, সেই প্রশ্নও উঠছে। যদিও দলবদল নিয়ে দিলীপ যেমন আনুষ্ঠানিক কিছু বলেননি, তেমনই দলের একাংশ নেতাদেরও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশে এ বিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটে থাকতে দেখা গেছে। রাজ্য বিজেপিতে দিলীপ আর শুভেন্দু দুই মেরুর বাসিন্দা হিসেবে পরিচিত, এবং দিঘা থেকে দিলীপ নাম করেই শুভেন্দুকে নিশানা করেছেন। তাঁর স্ত্রীও একই পথ নিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে দিলীপ ঘোষের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ কোন পথে গড়ায়, তিনি কি শেষ পর্যন্ত তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেবেন কিনা, তা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে তীব্র জল্পনা চলছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments